আমাদের পরিচয় ফেসবুক অনলাইনেই হয়েছিলো। তবে কখন কিভাবে সেটা এখন আর মনে করতে পারি না। একদিন ওকে আমাদের কালিকলম গ্রুপে জয়েন করার কথা বলি। এই তো লেখালেখি, কমেন্টে কমেন্টে খুনসুটি। একধাপ পেরিয়ে কথাও হয় ইনবক্সে। হঠাৎ হঠাৎ তো সেই ভোর রাতে মোবাইলে টুংটাং বেজে ওঠে। আমি দেখি একটা জল-জোছনা। এতটুকু পড়ে কি তোমাদের মনে হচ্ছে যে আমরা একে অপরের প্রেমে পড়েছি? উত্তর যদি জানতে চাও তো বলবো, “নাহ, আমরা প্রেমে পড়িনি, তবে ভালোবেসেছি। “জল-জোছনা” এর কোনো মানে আমরা খুঁজিনি।
কথোপকথন যে কবিতায় সাজতে পারে সেটা মনে হয় এই জল জোছনা পাগলীটার জন্য। বেশ কিছু কথোপকথন কবিতা আমাদের রয়েছে। এরপর হঠাৎ করেই হারিয়ে গেলো। অনলাইনে নেই, মোবাইল বন্ধ। মনের মাঝে ভয় হতো। বেঁচে আছে তো? দোয়া করেছি এমন খবর যেন না হয়।
কয়েকদিন আগে আমার ফোনে রিং বাজতে দেখে খুশি হয়ে যাই। এ যে সেই জল-জোছনা, হঠাৎ হারিয়ে যাওয়ার মতই হঠাৎ উদয় বছর খানিক পরে।
আজ বিকেলে একটা ক্ষুদে মেসেজ “কেমন আছো?” থেকে আরেকটা কথোপকথন জল-জোছনা কবিতা হলো।
/////////
- কেমন আছো?
- এই ভালো এই খারাপ
প্রেম মানে দৃষ্টিপাত - এই লাইন দুটি মাথায় রেখে
একটি কবিতা লিখে ফেলো - এটা তো একটা মুভির গানের লাইন
- তাতে কি?
তুমি তোমার ভাবনা জুড়ে দাও
একটু এদিক সেদিক করে লিখে ফেলো - তুমি লেখো
আমি তুমি মিলে - তাহলে আগে তুমি দুই লাইন লিখে দাও
- দেখি, লিখি কিছু একটা
মনে তো আসছে না কিছু - আরে আসবে আসবে
এই প্রান্তে আমি আছি সেটা ভুলে যাও
এখন না পারবো নিতে প্রেম
না পারবো দিতে প্রেম
তাই ধরে নাও এই প্রান্তে কিছুই নেই।
যে স্মৃতি, তোমায় উদ্বেলিত করে
যে ভালবাসার বুকে মাথা রেখে কিছু লিখতে চাও
শুধু তাই ভাবো
তোমার কবিতার সুগন্ধি ছড়াবে হাওয়ায় ভেসে ভেসে
রঙ ছড়াতে তোমার হাতের মেহেদীতে!
এখনো ভেবে পাচ্ছো না ওপারে কে আছে?
অবয়ব আছে তার, নাকি অবয়বহীন
বিনি সুতোর মালা হয় কখনো?
হয় হয়, হয় তো - আমায় একটা বেলি ফুলের মালা এনে দেবে?
- হুম, দেবো এনে
ভুলে যেওনা সুতোটা কিন্তু অবয়বহীন
অস্তিত্বহীনে অস্তিত্ব খোঁজা
পা পিছলে পড়া
কবিতা যেন তুমি পেন্সিল দিয়ে না লেখো! - পেন্সিল দিয়ে কাগজে আকিঁবুকিঁতে আঁকবো
একটা অবয়বহীনের অবয়ব
একটা চিঠি হবে, চিঠি দিও আমার স্বপ্নের
আমার শখের চিঠি
হোক তা পেন্সিল বা কলমের কালিতে
একটা চিঠি দিও আমায়
পেন্সিলের নিবে হলেও দেবোনা ঝাপসা হতে
যে চিঠিতে থাকবো প্রিয়তমা, বা বন্ধু হয়ে
ভালোবাসা হোক ঝড়-জলোচ্ছ্বাস
ও প্রান্তে কেউ নেই, কোথাও কেউ নেই
তবুও তুমি আছো মনের অলিন্দে
অবয়বহীন অস্তিত্বহীনে অঘোষিত প্রেম হয়ে,
ফিনিক্স পাখির মতো
তুমি থাকো একদম কাছে ছায়া হয়ে মায়া হয়ে
হাঁটছো আমার সাথে সাথে
হাত ছু্ঁয়ে আলিঙ্গনে
ক্লান্তি আমার পাঠিয়ে বনবাসে
আগলে রাখে আমায় তোমার ছায়ামুখ টুকুই যে
© আলম – ১০ এপ্রিল ২০২৫ইং, বিকেল ৫টা